আদর্শ বাসর রাত:
আজ আমার বাসর রাত। বাসর রাতে কি কি করতে হয় অনেকেই জানেনা । প্রতিটি নারী বা পুরুষ তার জীবনে এই একটি রাতটি আশা করে। এই রাতকে ঘিরে প্রত্যেক নারী বা পুরুষের কিছু আলাদা আলাদা মনের ইচ্ছা থাকে। বাসর রাতে সেক্স বা চোদা করায় সবার ইচ্ছা কিন্তু নয় । যাই হোক, নিজের কোনো পছন্দ না থাকায় বাবা মার ইচ্ছাতেই আমি বিয়ে করেছিলাম । সারাদিন বন্ধুদের অনেক ফাজলামো শুনে, সবার সাথে ছবি তুলতে তুলতে অনেকটা ক্লান্ত হয়ে উঠেছিলাম। তারপর বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে সবাই নিজের নিজের বাড়ি ফিরে যাওয়ায় এখন একটু শান্তি ফিরে পেলাম।
পরিচয় পর্ব নতুন বউয়ের সাথে করলাম
যাক এবার তাহলে বাসর ঘরে যাওয়ার পালা। যাই দেখি,আমার নতুন বউটা একা একা ঘরে কি করে? ওহ! আপনার সাথে তো পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়নি। এই হচ্ছে আমার ব্রাণ্ড নিউ বউ প্রিয়া। কি লাজুক ভাবে বসে আছে দেখছেন! ইস! বাসররাতের মত এমন লাজুকভাবে যদি মেয়েরা সারাজীবন থাকত তাহলে পুরুষেরা আর বিয়ে করতে ভয় পেত না। কথাটা আস্তে বলার পরেও প্রিয়ার কানে ঠিকই গেল। আর অমনি জটপট করে উত্তর এল- আপনার স্বামীরা বাসররাতের মত সারাজীবন রোমান্টিক (ভালোবাসলে) থাকলে মেয়েরা আর পরকীয়ায় জড়াত না। যাক বাবা এখানে পরকীয়া চলে এলো। বুঝেছি একটু সাবধানে কথা বলতে হবে, কথায় আছেনা নইলে ইট মারলে পাটকেল খেতেই হবে ।
তাই না!
নাহ! এবার মেজাজটা আসলেই খারাপ হয়ে গেল, আমি একটু বিরক্ত সুরে বললাম- দেখেন নারী মানে আমার কাছে শুধু ভোগবিলাসের বস্তু নয় বরং সুখে-দুঃখে জীবনের সঙ্গী, একজন বেস্ট ফ্রেন্ড , সারাজীবন পথ চলার সঙ্গী । সবার মত আমাকে ভাববেন না। বিশ্বাস করেন আজকে রাতে আপনার সাথে কোন শারীরিক সম্পর্ক করার চিন্তা ভাবনা নিয়ে আসিনি। শুধু মনের ভিতর জমে থাকা কিছু না বলা কথা আর বন্ধুত্বের আমন্ত্রণ নিয়ে এসেছি। আপনার মনের কথাগুলো শুনতে এসেছি, আপনাকে বুঝতে এসেছি। ২৫টা বছর কুমার হয়ে কাটিয়েছি, ধৈর্য আমার আছে বুঝেছেন ।
বন্ধুত্বের আমন্ত্রণ করা
এক নাগাড়ে এতগুলো কথা শুনার পর প্রিয়া একটু থমকে গেল। কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর বলল, আমাকে ক্ষমা করবেন, আমার আসলে না বুঝে শুনে এতগুলো কথা আপনাকে বলা উচিত হয়নি। কিন্তু আপনার কথার একটি বিষয় বুঝলাম না। আপনি বন্ধুত্ব করতে চান আমার সাথে কিন্তু কেন?
আমি একটা মুচকি হেসে মিস্টি গলায় বললাম – শরৎচন্দ্রের একটি লাইন আমার খুব মন পড়ে গেল । বিলাসী গল্পে তিনি বলেছিলেন- স্বামী-স্ত্রী ১০০ বছর একসাথে থাকিবার পরেও একে অপরকে চিনিতে পারে না। আমি মনে করি এই চিনতে বা বুঝতে না পারার কারণ হল- স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বন্ধুত্বের ও ভালোবাসার সম্পর্ক না থাকা। বন্ধুত্বের মধ্যে কর্তৃত্ব নেই, আছে শাসন, বারণ, ভালোবাসা, আছে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়া। তাই আমি ঠিক করেছি আপনি যতদিন না পর্যন্ত আমাকে আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড ভাববেন ততদিন আপনাকে কোন শারীরিক সম্পর্ক করতে বলবনা। আপনি কি বলেন মতামত চাই?
বাসর রাতের রোমান্টিক গল্প
এই কথা বলার পর প্রিয়া পলক না ফেলে আমার দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে। খুব ধীর কণ্ঠে আমাকে বলল- আমি রাজি আছি, তবে কিভাবে বুঝবেন আমি আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়েছি কিনা?
উত্তরে আমি বললাম- যেদিন আপনি আমায় তুই সম্বোধন করে ডাকবেন, সেদিন ভাবব আপনি আমাকে বেস্ট ফ্রেন্ড বানিয়েছেন।
প্রিয়া এবার একটু হেসে বলল – স্বামীকে কেউ আবার তুই বলে নাকি? লোকে কি ভাববে? আমাকে তো অনেক উলটা পালটা কথা শুনতে হবে ৷ জবাবে আমি বললাম- লোকে কি ভাববে তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আপনি কি ভাবছেন সেটাই আমার দেখার বিষয়। যাই হোক, অনেক বক বক করলাম, এবার আপনার পা টা মেলে দিন তো। আপনার পায়ের উপর বালিশ রেখে একটু শুব। আর আপনার কথা শুনব।
প্রিয়া খুব খুশি হয়ে আমাকে সারারাত তার অনেক গল্প, স্বপ্ন, মনের কথা শোনায়। শুনতে শুনতে ফজরের আযান পড়ে। ফজরের আযান শুনে আমি আর প্রিয়া ঘুমিয়ে পড়ি।
লজ্জায় লাল হয়ে ঠোটের কোণে হাসি রেখে প্রিয়া বলল- ঠোটে চুমু দিয়েছি আমার প্রতি আপনার ভালোবাসার জন্য, গালে চুমু দিয়েছি বন্ধুত্বের আমন্ত্রণের জন্য কপালে চুমুটি দিয়েছি আমাকে কাল রাতে সম্মান দেয়ার জন্য, চোখে চুমু দিয়েছি- আপনার ধৈর্য্যের জন্য, আর সবশেষে ঘাড়ে চুমু দিয়েছি একটি আদর্শ বাসর রাত উপহার দেয়ার জন্য।