বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর প্রথম কি করা উচিত ইসলাম কি বলে | bashor rate swami stri ki kora uchit islam ki bole

বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর প্রথম কি করা উচিত ইসলাম কি বলে



ইসলামে মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্য সুষ্ঠু ও পরিপূর্ণ শিক্ষা দেয়া রয়েছে। শুধু মাত্র ইসলাম ধর্মই নয় সমস্ত ধর্মেই সুষ্ঠু ও পরিপূর্ণ শিক্ষা দেয়া রয়েছে।
মানব জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছুই যাবতীয় সমস্যার সমাধান দেয়া আগে থেকে পবিত্র কোরআন-হাদিসে বলা রয়েছে । আর শরিয়তের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত এরকমই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বিয়ে। মহান আল্লাহ তায়ালা প্রাপ্ত বয়স্ক সক্ষম ব্যক্তিদের ওপর বিয়েকে ফরজ করেছেন। বিয়ে নিয়ে নারী-পুরুষের মধ্যে অনেক আশা আকাঙ্ক্ষা থাকে।
বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর প্রথম কি করা উচিত ইসলাম কি বলে

ইসলাম ধর্মে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈধ সম্পর্ক স্থাপনের একমাত্র উপায় হচ্ছে বিয়ে।  শুধু মাত্র ইসলাম ধর্মই নয় সমস্ত ধর্মেই বিয়ে মানে নারী-পুরুষের মধ্যে পবিত্র বন্ধন যা জন্ম-জন্মান্তর  একসাথে থাকার প্রতি অঙ্গীকার ।  ইসলামে বিয়ের বিধানে মোহরানা ধার্য করা এবং তা যথারীতি আদায় করার জন্য বিশেষ তাগিদ দেয়া হয়েছে। স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীকে মোহরানা প্রদান করা ফরজ বা ইসলাম ধর্মের নিয়ম । বিয়ে হচ্ছে শরিয়তের বিধান ও আনুষ্ঠানিকতা পালনের মধ্যে দিয়ে একজন পুরুষ ও একজন নারীর একত্রে থাকার ছাড়পত্র । নারী-পুরুষের উভয়েরই উচিত বিয়ের মাধ্যমে নিজেকে হারাম কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে বাঁচানোর নিয়ত করা।


পৃথিবীতে মানুষ প্রেরণের সময় থেকে অর্থাৎ হজরত আদম (আ.) এর সময় থেকেই এই প্রথা প্রচলিত হয়ে আসছে ও আজীবন চলতেয় থাকবে।  নারী ও পুরুষের এই পবিত্র বন্ধন সম্পর্কে ইসলামে বিশেষ কিছু বিধান দেয়া আছে। যা মেনে চলা একজন ঈমানদার বান্দার বিশেষ দায়িত্ব ও কর্তব্য ।

বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর প্রথম কি করা উচিত ইসলাম কি বলে


বিয়ের বিশেষ একটি অংশ হচ্ছে বাসর রাত। যা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ প্রতিটি নারী ও পুরুষের জীবনের কাঙ্ক্ষিত ও গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। বাসর রাত হচ্ছে নারী ও পুরুষের বিয়ের পর প্রথম রাত। বাসর রাতকে ফুলসজ্জা নামেও জানা যায়।


এই রাতে প্রথমবারের মতো স্ত্রী তার স্বামীর কাছে আসে নিজেদেরকে প্রথমবারের মতো করে একে অপরকে কাছে পাওয়া। ইসলামে বাসর রাতের কিছু বিধানের উল্লেখ আছে। যেগুলো একজন ঈমানদার স্ত্রী ও একজন মুমিন স্বামীর জন্য তা অত্যন্ত গুরুত্ববহ।
বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর প্রথম কি করা উচিত

বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর প্রথম কি করা উচিত ইসলাম কি বলে বিধানগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো-


(১) বিয়ের নিয়ত করা:


নারী এবং পুরুষের উভয়েরই উচিত বিয়ের মাধ্যমে নিজেকে হারাম কাজ থেকে বিরত রাখার নিয়ত করা। বিয়ের মাধ্যমে উভয়েই সদকার ছাওয়াব লাভ করবেন। নিজেদের মধ্যে একে অপরকে সারা জীবন ভালোবাসা । সারা জীবন একই সাথে থাকার জাবান কবুল করা । যাতে কেউ কাউকে কোনদিন ছেড়ে না চলে যায় এই কসম খাওয়া ।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের সকলের স্ত্রীর সঙ্গমপথে রয়েছে ছাদকার সওয়াব। সাহাবায়ে কেরামগন রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন যে হে রাসূলুল্লাহ জৈবিক চাহিদা মেটানোর জন্য সে কি নেকী লাভ হবে? রাসূল (সা.) সাহাবীদের জবাবে বললেন, ‘যদি কেউ সেই জৈবিক চাহিদা হারাম উপায়ে মেটায় তাহলে কি তার জন্য কোনো গুনাহ লেখা হত না? (অবশ্যই হতো) তেমনি সে চাহিদা হালাল উপায়ে মেটানোয়, তার জন্য নেকী লেখা হয়।’

(২) একসঙ্গে সালাত আদায় করা:




আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) কতৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন যে, ‘স্ত্রী যখন স্বামীর কাছে যাবে, তখন স্বামী সামনে দাঁড়িয়ে যাবে এবং স্ত্রী তার পেছনে দাঁড়িয়ে যাবে। অতঃপর তারা একসঙ্গে দুই রাকা‌‌ত সালাত আদায় করবে এবং মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করবে-

‘হে আল্লাহ পাক আপনি আমার জন্য আমার পরিবারে বরকত দান করুন আর আমার ভেতরেও বরকত দিন পরিবারের জন্য। আপনি তাহাদের থেকে আমাকে রিজিক দান করুন আর আমার থেকে উনাদেরও রিজিকের ব্যবস্থা করে দিন। হে আল্লাহ আপনি আমাদের যতদিন একত্রে রাখেন কল্যাণের সঙ্গে একত্রে রাখুন আর বিচ্ছেদ হলে কল্যাণের পথেই বিচ্ছেদ ঘটাবেন।’

(৩) স্ত্রীর মাথায় ডানহাত রেখে দোয়া পড়া:


রাসূলুল্লাহ (সা.) এই বিষয়ে বলেন-

তোমাদের কেউ যখন কোনো নারী (স্ত্রী), ভৃত্য বা বাহন থেকে উপকৃত হয় তবে তার মাথার অগ্রভাগে হাত রেখে বিসমিল্লাহ পড়ে দোয়া কর।

‘হে আল্লাহ পাক আপনার কাছে আমার স্ত্রীর এবং তার স্বভাবের কল্যাণ প্রার্থনা করছি এবং তার ও তার স্বভাবের অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’

(৪) নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা:


আবূ হুরায়রা (রা.) কতৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে-

‘যে ব্যক্তি কোনো ঋতুবতী নারীর সঙ্গে কিংবা স্ত্রীর মলদ্বারে সঙ্গম করে অথবা গনকের কাছে যায় এবং তার কথায় বিশ্বাস করে, সে যেন আমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা অস্বীকার করলো।’ এর থেকে বোঝা যায় যে, মেয়েদের (স্ত্রীর) ঋতু চলাকালীন সময়ে তাদের সঙ্গে সঙ্গম থেকে দূরে থাকতে হবে।
bashor rate swami stri ki kora uchit islam ki bole

(৫) ঋতুবতী স্ত্রীর সঙ্গে যা কিছুর অনুমতি রয়েছে:


স্বামীর জন্য ঋতুবতী স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গমপথ ও নিষিদ্ধ পথ ব্যবহার ছাড়া অন্য সব আচরণের অনুমতি রয়েছে। স্ত্রী পবিত্র হবার পর তার সঙ্গে সবকিছুই বৈধ। এসময় তার পাশে থাকা বা তার সঙ্গে সময় কাটানোতে কোনো সমস্যা নাই।

(৬) সঙ্গমের সময় দোয়া পড়া:


স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসকালে উল্লেখিত দোয়া পড়া সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি স্ত্রীর সহিত সঙ্গমকালে বলে, (আল্লাহ পাকের নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করুন আর আমাদের যা দান করেন তা থেকে দূরে রাখুন শয়তানকে) তবে সে মিলনের ফলে কোনো সন্তান হলে শয়তান ঐ সন্তানের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ এছাড়াও বীর্যপাতের সময় বীর্যপাতের দোয়া পড়া উচিত।

(৭) সঙ্গমের পর অযূ বা গোসল করা:


সহবাসের পর সুন্নাত হলো অযূ বা গোসল করে ঘুমানো। অবশ্যই গোসল করা উত্তম। আম্মার বিন ইয়াসার (রা.) রাসূলের একটি হাদিস বর্ণনা করেন যে, ‘তিন ধরনের ব্যক্তির কাছে ফেরেশতা যায় না আর তারা হলো: কাফির ব্যক্তির লাশ, জাফরান ব্যবহারকারী এবং অপবিত্র শরীর বিশিষ্ট ব্যক্তি, যতক্ষণ না সে অযূ করে।’

(৮) স্ত্রী সঙ্গে কাটানো সময়ের গোপন তথ্য প্রকাশ না করা:


বিবাহিত ব্যক্তির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য হলো স্ত্রীর সঙ্গে কাটানো সময়ের গোপন তথ্য কারো কাছে প্রকাশ না করা। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট বলে গণ্য হবে যে তার স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার মতো গোপন বিষয় প্রচার করে।’

(৯) বিবস্ত্র হয়ে সঙ্গম না করা:

সহবাস করার সময় একদম বিবস্ত্র হওয়া উচিত না কারণ এতে সন্তান নির্লজ্জ হয়ে জন্মগ্রহণ করে। সহবাসের সময় অবশ্যই গায়ের ওপর কোনো পাতলা চাদর বা অন্য কোনো বস্ত্র ব্যবহার করা উচিত।

 বাসর রাত নিয়ে কিছু  ইসলাম ধর্মের প্রশ্ন ও উত্তর : যা না জানলেই নয়


১. প্রশ্ন : বাসর রাতে নববধু কিভাবে সজ্জিত হবে?

উত্তর : নববধু মেহেদি ব্যবহার করবে, অলংকার পরবে এবং সধ্যমত শরীয়ত সম্মত উপায়ে সেজেগুজে উত্তম পোশাক-পরিচ্ছেদে সজ্জিত হবে। (দেখুন- আহকামে জিন্দেগী) সব পুরুষই চাই যাতে তার স্ত্রীকে বাসর রাতে অপসরার মতো দেখতে লাগুক ।

২. প্রশ্ন : বাসর ঘরে প্রবেশ করে কোন নামাজ পড়বে কি না?

উত্তর : পুরুষ বাসর ঘরে প্রবেশ করতঃ নববধুকে সহ দুই রাকআত (শুকরানা) নামায পড়বে। (দেখুন- শিরআতুল ইসলাম, আহকামুল ইসলাম) । নামাজ পড়বে আর বলবে হে আল্লাহ আমাদের দুজনকে যাতে সারা জীবন সুখে শান্তিতে একই সঙ্গে বাস করতে পারি এই বড় দান করুন ।

৩. প্রশ্ন : নামায পড়ার পর কি করবে?

উত্তর : অতঃপর স্ত্রীর কপালের উপরিস্থিত চুল ধরে বিসমিল্লাহ বলে এই দুআ পাঠ করা সুন্নাত-(বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা যুবিলাত আলাইহি, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররি হা ওয়া শাররি মা যুবিলাত আলাইহি) (দেখুন- ইমাদাদুল ফাতওয়া, আহকামুল ইসলাম)

৪. প্রশ্ন : বাসর ঘরে ঢুকে নামায ও দোয়া পড়ার পর আর কোন আমল আছে কি না?

উত্তর : বিভিন্ন ইসলামী কিতাবে বাসরঘরে ঢুকে উপরোক্ত আমলগুলো করতে বলা হয়েছে। এরপর স্বামী-স্ত্রী নিজেদের মত নিজেরা পরিচিত হতে থাকবে। তবে প্রথমে স্বামী মহর বিষয়ক আলোচনা করে নিবে। তা পূর্ণ আদায় না করে থাকলে স্ত্রী থেকে সময় চেয়ে নিবে। (সূত্র- আহকামুল ইসলাম)

৫. প্রশ্ন : সংগম শুরু করার পূর্বে সর্বপ্রথম কি করতে হবে?

উত্তর : সংগম শুরু করার পূর্বে সর্ব প্রথম নিয়ত সহীহ করে নেয়া; অর্থাৎ, এই নিয়ত করা যে, এই হালাল পন্থায় যৌন চাহিদা পূর্ণ করার দ্বারা হারামে পতিত হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে, তৃপ্তি লাভ হবে এবং তার দ্বারা কষ্ট সহিষ্ণু হওয়া যাবে, ছওয়াব হাছেল হবে এবং সন্তান লাভ হবে। (দেখুন- আহকামে জিন্দেগী, আহকামুল ইসলাম)

৬. প্রশ্ন : অনেকে বলে বাসর রাতে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা অনুচিত, কথাটি ঠিক কি না?

উত্তর : না, এধরণের কথা ঠিক নয়, এ সময় যে কোন উপভোগের জন্য স্বামী-স্ত্রী পূর্ণ স্বাধীন। তারা সন্তুষ্টচিত্তে যে কোন কাজ করতে পারে। তবে অবশ্যই প্রথমরাত হিসেবে একে অপরের চাহিদার প্রতি লক্ষ রাখা উচিত। (সূত্র- আহকামুল ইসলাম, আহমাকে জিন্দেগী)

৭. প্রশ্ন : সংগমের শুরুতে কোন দোয়া পড়তে হবে?

উত্তর : সংগমের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলে কার্য শুরু করা। তারপর শয়তান থেকে পানাহ চাওয়া। উভয়টিকে একত্রে এভাবে বলা যায়- বাংলা উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইতানা ওয়া জান্নিবিশ শাইতানা মা রাযাকতানা। অর্থ : আমি আল্লাহর নাম নিয়ে এই কাজ আরম্ভ করছি। হে আল্লাহ, শয়তানকে আমাদের থেকে দূরে রাখ এবং যে সন্তান তুমি আমাদের দান করবে তার থেকেও শয়তানকে দূরে রাখ। (দেখুন- আহকামে জিন্দেগী)

৮. প্রশ্ন : সংগমের বিশেষ কিছু আদব ও বিধি-নিষেধ জানতে চাই?

উত্তর : সংগমের কিছু আদব ও নিয়ম নিন্মরূপ- কোন শিশু বা পশুর সামনে সংগমে রত না হওয়া, পর্দা ঘেরা স্থানে সংগম করা, সংগম শুরু করার পূর্বে শৃঙ্গার (চুম্বন, স্তন মর্দন ইত্যাদি) করবে। বীর্য, যৌনাঙ্গের রস ইত্যাদি মোছার জন্য এক টুকরা কাপড় রাখা, সংগম অবস্থায় বেশী কথা না বলা, বীর্যের ও স্ত্রীর যৌনাঙ্গের প্রতি দৃষ্টি না করা, সংগম শেষে পেশাব করে নেয়া, এক সংগমের পর পুনর্বার সংগমে লিপ্ত হতে চাইলে যৌনাঙ্গ এবং হাত ধুয়ে নিতে হবে, বীর্যপাতের পরই স্বামীর নেমে না যাওয়া বরং স্ত্রীর উপর অপেক্ষা করা, যেন স্ত্রীও তার খাহেশ পূর্ণ মাত্রায় মিটিয়ে নিতে পারে, সংগমের পর অন্ততঃ বিছুক্ষণ ঘুমানো উত্তম, জুমুআর দিনে সংগম করা মুস্তাহাব, সংগমের বিষয় কারও নিকট প্রকাশ করা নেষেধ, এটা একদিকে নির্লজ্জতা, অন্যদিকে স্বামী/স্ত্রীর হক নষ্ট করা, সংগম অবস্থায় স্ত্রী-যোনীর দিকে নজর না দেয়া, তবে হযরত ইবনে ওমর (রা.) সংগম, অবস্থায় স্ত্রী-যোনীর দিকে দৃষ্টি দয়া উত্তেজনা বৃদ্ধির সহায়ক বিধায় এটাকে উত্তম বলতেন। (দেখুন- আহকামে জিন্দেগী)

৯. প্রশ্ন : কোন কোন অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সংগম করা যাবে না?

উত্তর : নিম্নোক্ত অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সংগম করা যাবে না। স্ত্রীর মাসিক বা প্রসবকালীন স্রাব চলা কালে। এতেকাফ অবস্থায়। রোজার দিনের বেলায়। এহরাম অবস্থায়। স্ত্রীর পিছনের রাস্তা দ্বারা। (দেখুন- স্বামী-স্ত্রীর মধুর মিলন, আহকামে জিন্দেগী)

১০. প্রশ্ন : সংগম অবস্থায় স্ত্রীর যোনীর দিকে নজর দেয়া যাবে কি না

উত্তর : সংগম অবস্থায় স্ত্রী-যোনীর দিকে নজর না দেয়া। তবে হযরত ইবনে ওমর (রা.) সংগম, অবস্থায় স্ত্রী-যোনীর দিকে দৃষ্টি দয়া উত্তেজনা বৃদ্ধির সহায়ক বিধায় এটাকে উত্তম বলতেন। (সূত্র – শরহুন নুকায়া ও হিদায়া)

১১. প্রশ্ন : বীর্যপাতের সময় কোন দোয়া পড়বে?

উত্তর : বীর্যপাতের সময় নিম্নোক্ত দুআটি পড়বে- বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লা তাজআল লিশ্শাইতানি ফিমা রাযাকতানী নাসীবান। অর্থ : হে আল্লাহ, যে সন্তান তুমি আমাদেরকে দান করবে তার মধ্যে শয়তানের কোন অংশ রেখ না। (দেখুন- আহকামে জিন্দেগী)

১২. প্রশ্ন : সংগম অবস্থায় স্ত্রীর যোনী স্বামী চোষতে পারবে কি না? এবং স্বামীর লিঙ্গ স্ত্রী চোষতে পারবে কি না?

উত্তর : সংগম অবস্থায় স্বামী স্ত্রী একে অপরের লজ্জাস্থানকে চোষা এবং মুখে নেওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ, এবং মাকরুহ ও গুনাহের কাজ। এটা কুকুর, গরু, বকরী ইত্যাদি প্রানীর স্বভাবের মত। তাই এ কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। চিন্তা করে দেখুন যে মুখে পবিত্র কালিীমা পড়া হল, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা হয়, দরুদ শরীফ পড়া হয়, তাকে এমন নিকৃষ্ট কজে ব্যবহার করতে মন কিভাবে চায়। তাই এ কাজ মুমিনের কাজ হতে পারে না। (দেখুন- ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ও ফাতাওয়ায়ে রহীমিয়া, আহকামে জিন্দেগী)

১৩. প্রশ্ন : দাঁড়িয়ে সহবাস করা যাবে কি না?

উত্তর : হ্যাঁ, দাঁড়িয়েও সহবাস করা যাবে। যারা বলে দাঁড়িয়ে সহবাস করা যায় না তাদের কথা ঠিক নয়। তাই ঐ কথায় কান দেয়া যাবে না।



পরিশেষে বলা যায় যে, ইসলামে সকল বিধান মেনে জীবন পরিচালনা করার মধ্যেই মানুষের কল্যাণ নিহিত। সুতরাং, প্রত্যেক নব-বিবাহিত দম্পতির উচিত, বাসর রাতের গুরুত্বপূর্ণ সময়কে আনন্দ-উৎসবের নামে অবহেলায় ও অনর্থক কাজে নষ্ট না করে নামাজ ও দোয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহর নিকট কল্যাণ কামনা করা।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকেই উত্তম আমল করার তওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন
Previous Post
Next Post
Related Posts